শুক্রবারের ট্রেডের বিশ্লেষণ
EUR/USD পেয়ারের 1H চার্ট
শুক্রবার EUR/USD পেয়ার আবার তীব্র দরপতনের সম্মুখীন হয়েছিল, কয়েক ঘণ্টার মধ্যে এই পেয়ারের মূল্য 150 পিপস হ্রাস পেয়েছে। নতুন ট্রেডারদের জন্য এটি উল্লেখ করা গুরুত্বপূর্ণ যে, এত কম সময়ের মধ্যে ইউরোর মূল্যের এমন বড় মুভমেন্ট সাধারণত দেখা যায় না। এমনকি কেন্দ্রীয় ব্যাংকের বৈঠকের পরেও সাধারণত মার্কেটে এই ধরনের প্রতিক্রিয়া দেখা যায় না। শুক্রবার ইউরোজোন এবং জার্মানির PMI প্রতিবেদনের প্রকাশের পর ইউরোর এই দরপতন মার্কেটে প্যানিকের বিষয়টি নিশ্চিত করে, সেইসাথে বিনিয়োগকারীরা ইউরো থেকে তাদের বিনিয়োগ প্রত্যাহার করে যাচ্ছে।
ইউরোর মূল্য কিছুটা বৃদ্ধি পেতে পারে বা কারেকশন করার চেষ্টা করতে পারে, তবে সামগ্রিকভাবে এখনও এই পেয়ারের মূল্যের বিয়ারিশ প্রবণতা বিরাজ করছে। মার্কেটে মাত্র দুই ঘণ্টার মধ্যে মাঝারি গুরুত্বসম্পন্ন প্রতিবেদনের প্রভাবে ইউরোর মূল্যের 150 পিপস দরপতন ঘটিয়েছে, যা মার্কেটে ইউরো বিক্রির প্রবণতা প্রদর্শন করে। 2024 জুড়ে আমরা এ বিষয়ে সতর্ক করেছি এবং বর্তমান পরিস্থিতি আমাদের প্রত্যাশার সাথে মিলে যাচ্ছে। এই পেয়ারের মূল্য পূর্বে উল্লেখিত 1.0451 এর লক্ষ্যমাত্রা ইতোমধ্যে পৌঁছেছে। আমাদের বিশ্বাস, ইউরোর মূল্য আরও কমতে পারে।
EUR/USD পেয়ারের 5M চার্ট
শুক্রবার 5-মিনিটের টাইমফ্রেমে বেশ কয়েকটি ট্রেডিং সিগন্যাল গঠিত হয়েছিল, তবে এমন একটি তীব্র দরপতনের পূর্বাভাস দেয়া প্রায় অসম্ভব ছিল। 1.0433-1.0451 জোনের ব্রেকের পরে ট্রেডাররা শর্ট পজিশন ওপেন করতে পারত, যেখানে মূল্য দ্রুত প্রথম লক্ষ্যমাত্রা 1.0359 এ পৌঁছেছিল। তবে, আমরা এই লেভেল থেকে রিবাউন্ডের ক্ষেত্রে ট্রেড করার পরামর্শ দিচ্ছি না কারণ বাউন্সটি খুব দ্রুত ঘটেছিল (যদিও এক্ষেত্রে মূল্য লক্ষ্যমাত্রায় পৌঁছেছিল)।
সোমবারে ট্রেডিংয়ের কৌশল:
ঘণ্টাভিত্তিক টাইমফ্রেমে, এখনও EUR/USD পেয়ারের মূল্যের কোনো উল্লেখযোগ্য কারেকশন দেখা যায়নি, কারণ মার্কেটের ট্রেডাররা ইউরো কেনার ব্যাপারে অনিচ্ছুক ছিল। যদিও একটি ছোটখাট ঊর্ধ্বমুখী কারেকশনের সম্ভাবনা রয়েছে (সাপ্তাহিক চার্ট দেখা যাচ্ছে যে এই পেয়ারের মূল্য পূর্বে আলোচিত রেঞ্জের নিম্ন সীমায় পৌঁছেছে), তবে এটি কারেকশনের সূচনা নিশ্চিত করে না।
সোমবার, আমরা মনে করি 1.0433-1.0451 জোন থেকে আবার দরপতন শুরু হতে পারে কারণ মার্কেটে এখনও শক্তিশালী বিয়ারিশ প্রবণতা পরিলক্ষিত হচ্ছে।
5-মিনিটের টাইমফ্রেমে, নিম্নলিখিত লেভেলগুলো বিবেচনা করা উচিত: 1.0269-1.0277, 1.0334-1.0359, 1.0433-1.0451, 1.0526, 1.0596, 1.0678, 1.0726-1.0733, 1.0797-1.0804, 1.0845-1.0851, 1.0888-1.0896। সোমবার ইউরোজোন বা মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে কোনো গুরুত্বপূর্ণ প্রতিবেদনের প্রকাশনা নির্ধারিত নেই, তাই শুক্রবারের তীব্র দরপতনের পর আজ মার্কেটে ট্রেডিং কার্যক্রম দেখা যেতে পারে। তবে, আমরা মূলত সেল সিগন্যালগুলোতে সজাগ দৃষ্টি রাখার পরামর্শ দিচ্ছি।
ট্রেডিং সিস্টেমের মূল নিয়মাবলী:
1) সিগন্যালের শক্তি: সিগন্যাল গঠন করতে কতক্ষণ সময় নেয় তার উপর ভিত্তি করে সিগন্যালের শক্তি নির্ধারণ করা হয় (বাউন্স বা লেভেলের ব্রেকথ্রু)। এটি গঠন করতে যত কম সময় লাগবে, সিগন্যাল তত শক্তিশালী হবে।
2) ভুল সিগন্যাল: যদি ভুল সিগন্যালের উপর ভিত্তি করে নির্দিষ্ট লেভেলের কাছাকাছি দুটি বা ততোধিক পজিশন খোলা হয় (যা টেক প্রফিট শুরু করেনি বা নিকটতম লক্ষ্যমাত্রায় পৌছায়নি), তাহলে এই লেভেলে প্রাপ্ত পরবর্তী সমস্ত সিগন্যাল উপেক্ষা করা উচিত।
3) ফ্ল্যাট মার্কেট: ফ্ল্যাট মার্কেটের সময়, যেকোন পেয়ারের একাধিক ফলস সিগন্যাল তৈরি হতে পারে বা কোন সিগন্যালের গঠন নাও হতে পারে। যাই হোক না কেন, ফ্ল্যাট মুভমেন্টের ইঙ্গিত পাওয়া মাত্র ট্রেডিং বন্ধ করে দেয়া উচিত।
4) ট্রেডিং টাইমফ্রেম: ইউরোপীয় সেশনের শুরু এবং মার্কিন সেশনের মাঝামাঝি সময়ে ট্রেড ওপেন করা উচিত। এর বাইরে সমস্ত ট্রেড ম্যানুয়ালি ক্লোজ করতে হবে।
5) MACD সূচকের সিগন্যাল: প্রতি ঘন্টার চার্টে, শুধুমাত্র উল্লেখযোগ্য ভোলাট্যালিটি এবং প্রতিষ্ঠিত প্রবণতার মধ্যেই MACD থেকে প্রাপ্ত সিগন্যালের উপর ভিত্তি করে ট্রেড করার পরামর্শ দেওয়া হয়, যা একটি ট্রেন্ডলাইন বা ট্রেন্ড চ্যানেল দ্বারা নিশ্চিত করা হয়।
6) কাছাকাছি লেভেল: যদি দুটি লেভেল একে অপরের খুব কাছাকাছি অবস্থিত হয় (5 থেকে 15 পিপস পর্যন্ত), সেগুলোকে সাপোর্ট এবং রেজিস্ট্যান্স লেভেল হিসাবে বিবেচনা করা উচিত।
7) স্টপ লস: মূল্য 15 পিপস উদ্দেশ্যমূলক দিকে যাওয়ার পর, ব্রেক-ইভেনে স্টপ লস সেট করা উচিত।
চার্টে কী কী আছে:
সাপোর্ট এবং রেজিস্ট্যান্স লেভেলগুলো হল সেই লেভেল যা কারেন্সি পেয়ার কেনা বা বিক্রি করার সময় লক্ষ্যমাত্রা হিসাবে কাজ করে। আপনি এই লেভেলগুলোর কাছাকাছি টেক প্রফিট সেট করতে পারেন।
লাল লাইন হল চ্যানেল বা ট্রেন্ড লাইন যা বর্তমান প্রবণতা প্রদর্শন করে এবং দেখায় যে এখন কোন দিকে ট্রেড করা ভাল হবে।
MACD (14,22,3) সূচক, হিস্টোগ্রাম এবং সিগন্যাল লাইন উভয়ই অন্তর্ভুক্ত করে, এটি একটি সহায়ক টুল হিসেবে কাজ করে এবং এটি সিগন্যালের উৎস হিসেবেও ব্যবহার করা যেতে পারে।
গুরুত্বপূর্ণ বক্তৃতা এবং প্রতিবেদন (সর্বদা নিউজ ক্যালেন্ডারে অন্তর্ভুক্ত থাকে) যেকোন কারেন্সি পেয়ারের মূল্যের গতিশীলতাকে ব্যাপকভাবে প্রভাবিত করতে পারে। অতএব, এগুলো প্রকাশের সময় অত্যন্ত সতর্কভাবে ট্রেডিং করতে হবে। প্রচলিত প্রবণতার বিপরীতে আকস্মিকভাবে মূল্যের পরিবর্তন থেকে সুরক্ষিত থাকতে মার্কেটে থেকে বের হয়ে যাওয়াই যুক্তিসঙ্গত হতে পারে।
নতুন ট্রেডারদের সর্বদা মনে রাখতে হবে যে প্রতিটি ট্রেড থেকে লাভ হবে না। একটি সুস্পষ্ট কৌশল গ্রহণ ও কার্যকর অর্থ ব্যবস্থাপনাই দীর্ঘমেয়াদে ট্রেডিংয়ের সাফল্যের ভিত্তি হিসেবে কাজ করে।